ভন্টা মুরগীটার গলায় প্যাঁচ মারতেই বেরিয়ে এলো ডিমটা। - পেটে ডিমও ছিলো রে, এটা ফাও। বুলটি বললো, ওটা খাস না, একে তো লোকের বাড়ির পোষা আদরের মুরগী চুরি করে এনে মারলি, সে তোকে মনে মনে অভিশাপ দেবেই, তার ওপর গর্ভবতী মুরগীর অভিশাপ। তুই যখন সবে প্যাঁচ মারছিস তখন মুরগীটা চোখ খুলে তোকে অদ্ভুতভাবে দেখে একটু মুখ খুললো, আমি স্পষ্ট দেখলাম একটা সোনালী হলুদ রঙের হাওয়া ওর মুখ থেকে বেরিয়ে সোজা তোর নাক দিয়ে শরীরের ভেতর ঢুকে গেলো। মুরগীটা ওর বাচ্চার আত্মাটাকে তোর ভেতরে ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে। এখন যদি তুই ওই ডিমটার ভেতরের প্রাণটাকে মেরে ফেলিস তোর কি হতে পারে ভেবে দেখেছিস? দাপুটে ভন্টা হাত পা মাথা সব থামিয়ে হাঁ ক’রে শুনছিলো, জিগ্যেস করলো, কি হবে? বুলটি বললো, আজই তোর জীবনের শেষ দিন, ডিমের ভেতরের’টা মরলে তুইও মরবি। ভেবে দ্যাখ। মেধো সব শুনছিলো, বললো, ও ডিমে আমি হাত দেবো না বাবা। হাত থেকে প’ড়ে ফেটে গেলেও তো মরে যাবে ভন্টা। ভন্টার শরীর মন আরো ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে। ডিমটার দিকে ভয়ের চোটে তাকাতে পারছে না, বললো, তোরা পিকনিক কর, আমি বাড়ি যাচ্ছি, ভালো লাগছে না শরীর, খালি মনে হচ্ছে ভেতরে এখানে ওখানে কিসের যেন ধাক্কা লাগছে... ওই আবার, ব’লে ফট ক’রে ঘাড় কাৎ করে ফেললো, তারপর আবার হাতটা কেমন নেতিয়ে দুলিয়ে দিলো দু’বার তিনবার, থুঃ থুঃ ক’রে থুতু ফেলে দিলো ক’বার, চোখ বড়ো ক’রে ঠোঁট ভেটকে দাঁত বার ক’রে ভীষণ সব মুখ বানাতে বানাতে জোরে হেঁটে দৌড়ে পালিয়ে গেলো ভন্টা। পেছনে দৌড়লো মেধো। ওদের দিকে তাকিয়ে বুলটি নিজের তৈরী গল্পে এতো জোশ আছে ভেবে কাঁধ ঝাঁকাতে যাবে, হঠাৎ কাছে জোরে ডানা ঝাপটানোর শব্দ পেলো, তারপরেই নীচে তাকিয়ে দেখলো ডিমটা কি ক’রে যেন ফেটে গেছে। ভয় সেঁধোলো তার শরীরে, ওই অবস্থায় চোখ ঘুরিয়ে দেখলো একটা সোনালী হলুদ রঙের ছোট্টো ছানা ঘাড় মটকানো মুরগীটার নেতিয়ে পড়া মুখের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। বুলটি ভয়ে সিঁটিয়ে যেতে যেতে এবার ভাবলো, তবে কি সেই আলো’টা ঠিকই দেখেছিলো সে, গল্প নয়?